নজরুল জয়ন্তী। উম্মে হাবিবা চৌধুরী
উম্মে হাবিবা চৌধুরী::
চপলা চপল হিন্দোল
চির দুরন্ত দুর্মদ
কবি কাজী নজরুল,
মাথায় ছিল তাঁর
ঝাঁকড়া চুলের বাবরি কাট
বর্ণাঢ্য জীবন সংগ্রামী তিনি
অদম্য অনন্য বহুমুখী প্রতিভা তাঁর।
শিশুকালে মক্তব পাঠ সমাপন শেষে
করেছেন শিক্ষকতা সেই মক্তবে।
দিয়েছেন আজান
হয়েছেন খাদেম
আল্লাহর ঘর মসজিদে।
করতেন গান নাটক
গ্রামের লেটোদলে।
জীবিকার অবসরে রুটির দোকান
আসানসোলে করতেন সাহিত্যচর্চা।
হৃদয়বান দারোগাবাবু
রফিজউল্লাহ সাহেব
দিলেন সহমর্মিতা
এলেন ময়মনসিংহ ত্রিশাল এ
হলেন ভর্তি দরিরামপুর হাই স্কুলে।
বাঁধনহারা তিনি
হলোনা সেখানে
তাঁর বেশী দিন থাকা,
গেলেন রাণীগঞ্জে
হলেন ভর্তি সিয়ারসোল রাজ স্কুলে,
সেখান থেকে গেলেন চলে করাচী,
ছিলেন তিনি
যুদ্ধে যাওয়া সৈনিক
লিখেছেন কতো
রণসংগীত গণসংগীত
বাজিয়েজেন অগ্নিবীণা
জাগরণী সুর।
সাম্যবাদী সব্যসাচী কবি
অসংগতিপূর্ণ সামাজিক
দায়বদ্ধতাহীন রীতিনীতির
বিপক্ষে তীক্ষ্ণ ক্ষুরধার ছিল
তাঁর লিখনি।
গেয়েছেন যৌবনের গান
সাম্প্রয়াদায়িক সম্প্রীতির গান
বিল্পবী তারুণ্যর কবিতা
হয়েছেন বিরাগভাজন
করেছেন কারাবরণ।
বিদ্রোহী কবি
বিরহবিধুর বিস্ময় তিনি
ধুমকেতু
হয়েছেন উদিত
করেছেন সমৃদ্ধ
বাংলা সাহিত্য।
তাঁর লিখা হাম নাত ইসলামী কবিতা
জাগায় প্রাণে সঞ্জীবিনী ধারা।
প্রভাতি, লিচুচোর, খাঁদু দাদু,
খুকি ও কাঠবিড়ালি কবিতাসমূহ
শিশু প্রাণ সঞ্চারিত হয়।
মাত্র তেইশ বছর
সাহিত্য সাধনা তাঁর,
আরবী,ফার্সি, উর্দু, হিন্দি, বাংলা
প্রভূত ভাষা সংমিশ্রণে
দিয়েছেন উপহার
অজস্র গান নাটক
কবিতা আর উপন্যাস।
দ্রোহের কবি
তাঁর আত্মচেতনা
গূঢ় উপলব্ধি মর্ম
পবিত্র শবে মেরাজ স্মরণ
আধ্যাত্মিক বলয়
যখন তিনি লিখেন
মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দুলোক ভেদিয়া
খোদার আসন আরশ ছেদিয়া
উঠিয়াছি চির বিস্ময় আমি
বিশ্ব বিধাত্রীর।
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা
চির উন্নত মম শির,
এখানে তাঁর চরম প্রাপ্তি
পরম শান্তি।
তিনি ছিলেন মোদের ঐশ্বর্য্য
আলোকদীপ্ত প্রদীপসম
বহমান স্রোতের গর্জন
চিরন্তরের আভায়
যুগান্তরের প্রতিবিম্ব।
হে কবি বর
বিনম্র সালাম আপনায়।