মহান মুক্তিযুদ্ধে হযরত শাহ জিল্লুর রহমান আলী শাহ’র (রহঃ) অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে
প্রাকৃতিক দূর্যোগকে উপেক্ষা করে হাজারো ভক্তের আন্তরিক উপস্থিতিতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফের আধ্যাত্নিক সাধনার প্রাণ পুরুষ উপমহাদেশের বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন এর অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব সৈয়্যদুল আজম হযরত হাফেজ হাকিম শাহ মুহাম্মদ বজলুর রহমান (রহঃ) এর যোগ্যতম উত্তরসুরী ও সাহেব জাদা একাত্তরের মহান মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক পীরে তরিকত রাহনুমায়ে শরীয়ত, মুরশীদে বরহক কুতুবে জমান হযরত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান আলী শাহ (রহঃ) এর ১৫ তম ওরশ শরীফ মহান ২০ মহররম, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩০ বাংলা, ০৮ আগষ্ট, ২০২৩ ইংরেজী রোজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বেতাগী রাঙ্গুনিয়া দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফে অনুষ্ঠিত হয়।
ওরশ শরীফের দিনব্যাপী কার্যক্রমের মধ্যে ছিল পবিত্র খতমে কোরআন শরীফ, খতমে তাহলীল শরীফ, খতমে ইউনুছ, খতমে সূরা ইখলাস, খতমে খাজেগান শরীফ, খতমে গাউছিয়া শরীফ ও বেলা ৩টা থেকে হুজুর কেবলার জীবনী আলোচনা, প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরামগনের ওয়াজ নছিহত, মিলাদ মাহফিল, আখেরী মোনাজাত ও তবারুক বিতরণ। ওরশ শরীফ উপলক্ষে দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফের নিয়মিত প্রকাশনা ত্রৈমাসিক “আস্তানা” প্রকাশিত হয়েছে।
ওরশ শরীফের মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন আনজুমান রিসার্স সেন্টারের মহাপরিচালক বিশিষ্ঠ লেখক, গবেষক ও সংগঠক আলা হযরতের কানযুল ইমান তাফসিরের অনুবাদক আল্লামা এম এ মান্নান, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত এর কো চেয়ারম্যান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শায়খুল হাদীস আল্লামা সুলাইয়মান আনসারী, ইমাম শেরে বাংলার বড় সাহেবজাদা হাটহাজারী দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিকত আল্লামা আমিনুল হক আল কাদেরী, অধ্যক্ষ আল্লামা মারেফাতুন নুর, অধ্যক্ষ আল্লামা ইলিয়াছ নুরী, উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুফতী আলীআকবর, উপাধ্যক্ষ মাওলানা জসিম উদ্দিন আবেদী, মাওলানা কুতুব উদ্দিন, শাহজাদা শফিক,শাহজাদা হাসান, শাহজাদা হোসাইন,শাহজাদা মাওলানা সরওয়ার আজম,মাওলানা ইসহাক, মাওলানা আহমদ করিম নঈমী, শাহজাদা মাহবুবুর রহমান ছফিউল্লাহ (মাওলানা), শাহজাদা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান (পেঠান শাহ),এডভোকেট সৈয়দ রেজাউল করিম বাবর,আলমশাহ, শাহজাদা বদরুদ্দিন মোহাম্মদ বদরুর রহমান মহিউদ্দিন জিলি, শাহজাদা কামরুল আরশ মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান জিলান।
মাহফিলে মিলাদ কিয়াম পরিচালনা করেন দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফের মোন্তাজেম ও মেজ শাহজাদা মাওলানা আহমদ উল্লাহ জিয়াউর রহমান আবুশাহ, দেশ জাতি ও মানবতার কল্যাণে হুজুর কেবলার আত্মীয় স্বজন, ভক্ত মুরীদান ও সর্বস্তরের সুন্নী মুসলমান দেশবাসীর সমৃুদ্ধি উন্নয়ন কামনা করে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন বেতাগী আস্তানা শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিকত মাওলানা মোহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ (মাঃজিঃআলী)।
সভায় বক্তারা বলেন শরীয়ত তরিকতের খেদমতের পাশাপাশি প্রাতিষ্টানিক ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালী জাতির মহান স্বাধীনতায় হযরত শাহ জিল্লুর রহমান আলী শাহ’র(রহঃ) অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশ, জাতি, মানবতার কল্যাণ ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের প্রচার প্রসারে ও দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফ অসাধারন ভাবে ভূমিকা পালন করে আসছে। ওরশ শরীফ উপলক্ষে বেতাগী আনজুমানে রহমানিয়ার পক্ষ হতে ৪ দিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য ব্যাপক কর্মসূচী আয়োজন করা হয়। তন্মধ্যে ১ম দিন, মানুষের কাছে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের প্রত্যয়ে প্রতিবারের মত ০৫ আগষ্ট, ২০২৩ শনিবার বিনামূল্যে সমন্বিত চিকিংসা সেবা ও চক্ষু শিবির, ডায়াবেটিক ও রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ক্যাম্প দরবার এ বেতাগী আস্তানা শরীফে অনুষ্ঠিত হয়।
বেতাগী আন্জুমানে রহমানিয়া, লায়ন্স ও লিও ক্লাব অব চিটাগাং ইম্পেরিয়াল সিটি এবং হযরত শাহ জিল্লুর রহমান (রহঃ) লায়ন্স চ্যারিটেবল আই সেন্টার এর যৌথ আয়োজনে হৃৎস্পন্দন (মেডিকেল শিক্ষার্থী ও ডাক্তারদের দ্বারা পরিচালিত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন) চট্টগ্রাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল এর সহযোগিতায় এই সমন্বিত মেডিকেল সেবা ক্যাম্পে বিনামূল্যে ৭৮ জন রোগীকে মেডিসিন, ৬০ জন রোগীকে গাইনি, ৫০ জন রোগীকে শিশু, ২০০ জন রোগীকে চর্ম, ৫০ জন রোগীকে নাক,কান ও গলা, ২০০ জন রোগীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ১৫০ জন রোগীর ডায়াবেটিক স্ক্রিনিং এবং ২০০ জনের অধিক রোগীকে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। ২য় দিন, ৬ আগষ্ট,২০২৩ রবিবার, মহানবী রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের নিমিত্তে পরিবেশ সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অক্সিজেন সরাবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বেতাগী আনজুমানে রহমানিয়ার উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন কার্যক্রম অনুষ্টিত হয়। ৩য় দিন, ৭ আগষ্ট, ২০২৩, সোমবার, বিভিন্ন কলেজ, মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে এবং রাঙ্গুনিয়া প্রশাসনের দপ্তরে একাত্তরের মহান মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা সমৃদ্ধ বই ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জমায়াত এর আকিদা ভিত্তিক ধর্মীয় কিতাবাদী ও তাফসির বিতরণ করা হয়। ৪র্থ দিন ওরশের মূল কার্যদিবস অনুষ্টিত হয়।