বেনাপোলে ৩ মাসে রাজস্ব আদায় কমেছে ২৩৯ কোটি টাকা
সোহাগ হোসেন, বেনাপোল: যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই আলোকে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।এ সময় পণ্য আমদানি হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৬১৫ মেট্রিক টন। আর রফতানি করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৪৯ মেট্রিক টন।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দাম ঊর্ধ্বগতি আর দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এলসির সংখ্যা কমিয়েছে। বর্তমানে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি কমিয়েছেন। তারা দেশের পরিস্থিতি দেখছেন। আশা করা যাচ্ছে, সামনের মাসগুলোতে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক গতি পাবে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি করা হয়েছিল ২৬ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। ২০১৯-২১ অর্থবছরে পণ্য আমদানি করা হয়েছিল ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪ মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য আমদানি করা হয় ২০ লাখ ১১ হাজার ৬ মেট্রিক টন পণ্য।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, সরকার পরিবর্তনের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দেশের পরিস্থিতি কোথায় যায়, সেটি দেখছেন। আবার ডলারের উচ্চমূল্যও একটি বড় ব্যাপার। তবে আশা করা যাচ্ছে, সামনের মাসগুলোতে বাণিজ্য গতি পাবে।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দেশে জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে সামনে আমদানি-রফতানি বাড়বে। তখন রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।
বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, গেলো জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার কারণে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি থেকে বিরত ছিলেন। এখন ডলারের পরিস্থিতিও স্থিতিশীল। আশা করা যাচ্ছে, বাকি মাসগুলোতে ব্যবসায়ীরা পুরোদমে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করবেন। তখন আমাদের রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।