রাঙামাটির ডিসি ও এডিসির বিরুদ্ধে আ’লীগের পরামর্শে কাজ করার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” স্লোগানকে সামনে রেখে বুধবার ৮ জানুয়ারি-২০২৫ ইংরেজি তারিখ রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের আয়োজনে রাঙামাটিতে শুরু হয় ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫।
রাঙামাটি জেলাপ্রশাসকের কার্যালয় সাধারন শাখার স্মারক নং: ০৫. ৪২. ৮৪০০. ২০৪. ১০. ০১৯. ২৪. ১৬ তারিখ : ০৬ জানুয়ারি-২০২৫ রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন স্বাক্ষরিত ৩১টি সরকারি, বে-সরকারি ও ব্যক্তিকে নোটিশ প্রেরণ করা হয়।
ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন ও নবযুগের সূচনাকারি মুল অংশিজন (স্টেকহোল্ডার) জাতীয় রাজনৈতিক পার্টি/দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশসহ রাঙামাটি জেলায় কর্মকান্ড আছে এমন ধরনের কোন রাজনৈতিক পার্টি/দলকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত রাঙামাটিতে ‘তারুণ্যের উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফেইজবুক পেইজ ডিসি রাঙামাটি পেইজে ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ সকাল ১০.৩০ টায় জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালীর বিষয়ে পোষ্ট দেয়া হলে, বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন লিখেছেন, রাজনৈতিক দল হচ্ছে এ ধরনের অনুষ্ঠানের স্টেকহোল্ডার তাদের বাদ দিয়ে এ অনুষ্ঠান কতটুকু কার্যকর হবে ?
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক এড. মামুনুর রশিদ লিখেছেন, কাদের নিয়ে অনুষ্ঠান কিছুই জানলাম না। আমরা কি জেলার বাহিরের কেউ। কখন প্রস্তুতী নিলেন তাও জানিনা।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহিলা দল রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি নূরজাহান বেগম (জাহান নূর) লিখেছেন, তথ্য এর ঘাটতি, কখন কি হচ্ছে, কাদের কে নিয়ে ?
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের হয়ে সাফাই দিয়ে লিখেছেন, উক্ত প্রোগ্রামে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সকলকেই নোটিশের কপি প্রেরন করা হয়েছে। তাহলে এই ভদ্রলোকের পোষ্টের সূত্র ধরে বলা যায় বা বুঝা যায় তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ এর স্টেকহোল্ডার বা অংশিজন রাজনৈতিক পার্টি/দল সমুহ নয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক জুঁই চাকমা বলেন, লোকজন বলা বলি করছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ এর বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রামে তিনি স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি সন্ত্রসীদের গডফাদার বর্তমানে কারাগারে আছে ফজলে করিম এর আত্মীয়। রাঙামাটির সাবেক জেলা প্রশাসক স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ভোট চোরের অন্যতম মোশারফ হোসেন খান, সাবেক ডিসি চলে যাওয়ার পর মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ রাঙামাটিতে আসার পর থেকে আমরা লক্ষ করেছি ওনার সকল কর্মকান্ড ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিরুদ্ধে।
রাঙামাটি জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর এবং সন্ত্রাসীরদের গডফাদার রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিমের খাস লোক।
জুঁই চাকমা আরো বলেন, বর্তমান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সে যখন রাঙামাটির কাপ্তাই ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও ছিলো তার রুমে আওয়ামীলীগ নেতা ছাড়া অন্যদের প্রবেশধীকার নিষিদ্ধ ছিলো। এর সত্যতা তো ধীরে ধীরে রাঙামাটির রাজনৈতিক পার্টির নেতা-কর্মীরা এবং সাধারন জনগণ জেনে গেছেন।
তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে রিজার্ভ বাজারস্থ শহীদ এম আব্দুল শুক্কুর মাঠ প্রাঙ্গণে লোক ও কারুশিল্প মেলা (১৬-২৪ জানুয়ারি,২০২৫) এর আয়োজন করা হয়েছে
জুঁই চাকমা বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে জনগণে রক্তচুষা দল রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুছা মাতাব্বরের প্রেসক্রিপসন মোতাবেক জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ এধরনের প্রোগ্রাম রিজার্ভ বাজার এলাকায় দিয়েছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ ও মোহাম্মদ রুহুল আমীন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুছা মাতাব্বরের পরামর্শে ২০২৪ সালের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনে বসে কাজ করছেন বলে আমাদের ধারনা, বলেন জুঁই চাকমা ।
বাম নেতা জুঁই চাকমা আরো বলেন, রাঙামাটির বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন ২০২৪ সালের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করছেন এবং রাঙামাটি জেলার রাজনৈতিক পার্টি সমুহকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বল আমাদের পার্টির ধারনা।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পক্ষের সকল রাজনৈতিক পার্টি ও ছাত্র-শ্রমিক-জনতাকে সাথে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করবো।
আন্তর্বর্তীকালিন সরকার যদি রাঙামাটির বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীনকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন থেকে সরিয়ে না নিলে, প্রশাসন সংস্কারের অংশ হিসাবে জনমত তৈরীর মাধ্যমে স্বৈরাচারের দোসরদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলয়ের ঘোষণার কথা বলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক জুঁই চাকমা।