সামাজিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে
মাইজভাণ্ডারী একাডেমির ১১তম উলামা সংলাপে বক্তারা
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর ১১৯তম ১০ মাঘ উরস শরিফ উপলক্ষে ‘এস জেড এইচ এম ট্রাস্ট’-এর ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘মাইজভাণ্ডারী একাডেমি’ আয়োজিত ‘বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের পূর্বশর্ত এবং তা পূরণে উলামায়ে কেরামের ভূমিকা’ শীর্ষক ‘১১তম উলামা সংলাপ’শনিবার নগরীর জামালখানস্থ সুলতান আহমদ হল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।
গাউসিয়া হক মন্জিল, দরবার-ই-গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর সাজ্জাদানশীন এবং শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ) ট্রাস্ট এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (ম. জি. আ.)-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মুহাম্মদ নুর হোসাইন, ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, ডক্টর আল্লামা মুহাম্মদ মহিঊল হক, সৈয়দ মুহাম্মদ মুনতাছির মোহাইমেন, মাওলানা রেজাউল মোস্তফা তানভীর আযহারী।
সংলাপে আলোচকগণ বলেন, জাতিগত, গোষ্ঠীগত, লিঙ্গগত, ধর্মগত, অঞ্চলগত, বর্ণগত, বয়সগত ইত্যাদির ক্ষেত্রে বৈষম্য সমাজে হয়ে থাকে। বৈষম্য প্রকাশ পায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে।
মানুষের মধ্যে সভ্যতা-সংস্কৃতি ও ভাষার ভিন্নতা আছে। বিভিন্নতা আছে জাতি ও গোষ্ঠীর মধ্যে। জাতিগত বৈষম্য ও একই দেশে বসবাসকারী বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে গোষ্ঠীগত বৈষম্য রয়েছে। দেশ ও সমাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি হয়। রং এর ভিন্নতার কারণে সৃষ্টি হয় বর্ণবৈষম্য। আবার লিঙ্গবৈষম্য মারাত্মক আকার ধারণ করে আছে। ধর্মবৈষম্য আরেকটি মারাত্মক সমস্যা পৃথিবীব্যাপী। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় দশ হাজার ধর্ম আছে। ধর্মের বৈচিত্র এটাও একান্ত আল্লাহর ইচ্ছা। প্রত্যেকের নিকট তার ধর্মবিশ্বাস পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। কেউ সেই বিশ্বাস আঘাত করা মানে তার ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা। প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (দ.) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন।
পবিত্র কুরআনের ভাষায় ধর্মের ব্যাপারে জবরদস্তিও নিষিদ্ধ। এটার বিপরীত হলো ধর্মসাম্য। মদিনার সনদের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রাষ্ট্রে সকল ধর্মের মানুষ এমনকি নাস্তিকরাও স্বাধীনভাবে ন্যায্য ধর্মীয় অধিকার ভোগ করেছেন। আল্লাহ্ নবি হযরত মুহাম্মদ (দ.) ধর্মীয় সংখ্যালগুকে সাধারণ অধিকার থেকে বঞ্চিত বা অত্যাচার করা থেকে বারণ করেছেন। তাই দয়া সাম্য ন্যায়-নীতির ভিত্তিতে ইসলামী দর্শনের আলোকে সমাজে বিচারসাম্য-ধনসাম্য-ধর্মসাম্য প্রতিষ্ঠা করে সামাজিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে আলেম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
ড. নুরুন্নবী আযাহারীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন মাওলানা জাহেদুল ইসলাম আযহারী, মাওলানা সৈয়দ মনছুর উল্লাহ্ সুলতানপুরী, মাওলানা সৈয়দ আহমদুল হক মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা শেখ সাইফুল্লাহ্ ফারুকী, মাওলানা সৈয়দ মাসুম কামাল আযহারী, মাওলানা নিজাম উদ্দিন নোমানী, মাওলানা এ বি এম আমিনুর রশিদ, মাওলানা সৈয়দ জালাল উদ্দিন আযহারী, মাওলানা নুরুল্লাহ্্ রায়হান, বিশিষ্ট ব্যাংকার মাওলানা ইসকান্দর আলম, মাওলানা শায়েস্তা খান আল আযহারী প্রমুখ।
এতে পর্যবেক্ষক ছিলেন এস জেড এইচ এম ট্রাস্ট সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এমডি জাফর, ইঞ্জিনিয়ার আবু নাসের নুর অন্তু, অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ তরিকুল আলম প্রমুখ।