তরুণদের জন্য বিনিয়োগ করার এখনই শ্রেষ্ঠ সময়
শেখ বিবি কাউছার::
একজন মানুষ যেমন সুস্থ মেরুদণ্ড ব্যতীত দাঁড়াতে পারে না,ঠিক তেমনি একটি দেশ,একটি রাষ্ট্র, একটি সমাজ, একটি পরিবার সুশিক্ষা ব্যতীত উন্নত হতে পারে না। জাতিসংঘ ২০১৫ সালে দারিদ্র্য বিমোচন, বিশ্ব রক্ষা এবং একটি নতুন টেকসই উন্নয়নের এজেন্ডা হিসেবে সকলের জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিততে ১৭টি লক্ষ্য ও ১৬৯টি সহায়ক লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করে।
যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা sustainable development goalsবা সংক্ষেপে SDGs নামে পরিচিত।
এখানে ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে চতুর্থ লক্ষ্য হল মানসম্মত শিক্ষা বা গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা ও আজীবন শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা। এখন কথা হল একথাটা আমরা কয়জনই বা জানি।
আমাদের দেশের কয়জন মানুষের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে ধারণা আছে? কারণ এসডিজি সম্পর্কে যদি আমাদের স্বচ্ছ ধারণা না থাকে তাহলে সামনে এগিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়বে।
আমাদের হাতে হয়তো আর বেশি সময় নেই কারণ এখন ২০২১ সাল। তারপরও সবাই মিলে যদি সমন্বিতভাবে কাজ করা যায় তাহলে যে লক্ষ্যমাত্রাগুলোতে পৌঁছানো এখনো বাকী আছে তা অর্জন করা কঠিন কিছু নয়। তাই এখনই প্রয়োজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সর্বোপরি সাধারণ জনগণের সামনে এসডিজি বা এসডিজির লক্ষ্যগুলো তুলে ধরা।
যেমনঃ
? শিক্ষকদের ট্রেনিং এ (প্রাথমিক -কলেজ) একটা সেশনের আয়োজন করা যেতে পারে।কারণ আমরা শিক্ষকরা জানলেই জানবে শিক্ষার্থীরা।
? অভিভাবকদের নিয়ে মিটিং করা যেতে পারে।
? এসডিজি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা যেন একটা প্রাথমিক ধারণা পায় তাই তাদের পাঠ্যবইয়ে এটা অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা যেতে পারে।
? বিলবোর্ড করা যেতে পারে।
?ক্যালেন্ডার তৈরি করে যেতে পারে ইত্যাদি।
এসডিজি সম্পর্কে আমাদের যত বেশি ধারণা থাকবে ততই এর লক্ষ্যমাত্রা গুলো অর্জন করা আমাদের জন্য সহজ হবে।
কারণ এসডিজিতে বলায় আছে কাউকে বাদ না দিয়ে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে এগিয়ে যেতে হবে। এটি বাস্তবায়নে সবার সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে। এখন দেশে জনসংখ্যার অর্ধেক অংশই কিন্তু যুবক বা তরুণ প্রজন্ম।
ধারণা করা হচ্ছে ২০৪১ সালে দেশের জনসংখ্যা হবে ২১ কোটি বা তারও বেশি। তখন যুবক বা তরুণ জনসংখ্যা তুলনামূলক কমবে।এখনই দেশে তরুণদের সংখ্যা বেশি তাই তাদের জন্য বিনিয়োগ করার এখনই শ্রেষ্ঠ সময়। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে তরুণদের গুরুত্ব দিতে হবে।
আজ যার বয়স ১০ বছর, ২০৩০ সালে তিনি হবেন ২০ বছরের তরুণ বা তরুণী। যার কারণে ২০৩০ সালে তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশের কথা মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে। এখানে সরকারের একার পক্ষে করা সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত সবাই এগিয়ে না আসে।
সর্বোপরি টেকসই উন্নয়নের (Sustainable Development) জন্য প্রয়োজন প্রচুর গবেষণা, উদ্ভাবন, এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সময় উপযোগী নিয়ম- নীতি।