আযান-নামাজের সময় দুর্গাপূজার বাদ্য-বাজনা বন্ধ রাখার আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই
আযান-নামাজের সময় দুর্গাপূজার বাদ্য-বাজনা বন্ধ রাখার আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী::
সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্মনিরপেক্ষতা হলো সংবিধানের চারটি মূলনীতির একটি। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সরকারি ভাষ্যমতে বিশ্ব সভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ এ দেশ। দেশে মোট জনসংখ্যার ৯০.৪ শতাংশ মুসলমানের বিপরীতে ৮.৫ শতাংশ হিন্দু বসবাস করে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক দিয়ে এদেশে মুসলমানের পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অবস্থান। শারদীয় দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।
আজ ১১ই অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া দুর্গোৎসব চলবে ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে এ বছর ৩২ হাজার ১১৮ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। দুর্গোৎসবে পুজা-অর্চনা ছাড়াও লাউডস্পিকারে বাদ্যযন্ত্র বাজানো, মাইকে গান-বাজনা বিরতিহীনভাবে চলতে থাকে। মসজিদে আযান ও নামাজ চলাকালীন মাইক বাজানোর নিষেধাজ্ঞা আছে।
কিন্তু কিছু জায়গায় এ নিয়ম আংশিক মানলেও বেশিরভাগ স্থানে নিয়ম মানার কোন বালাই নেই। বাদ্যযন্ত্র বাজতেই থাকে। যার ফলে পুজা মণ্ডপের মাত্রাতিরিক্ত সাউন্ড মসজিদের আযান, মুসল্লী এবং ঘরে প্রার্থনারত ধার্মীক মানুষদের নিয়মিত ইবাদতের বিঘ্ন ঘটে। যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য একটি বড় হুমকিও বটে। বাংলাদেশ ধর্মীয় স্বাধীনতার দেশ।
এর অর্থ হলো, যে যার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান নিজস্ব রীতিনীতি অনুসারে পালন করবে। কেউ কারো ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে না। কারো ধর্মচর্চা অন্য ধর্মের ক্ষতির কারণ হতে পারবে না। এমতাবস্থায় যদি দুর্গাপূজার বাদ্য-বাজনা মুসলমানদের ধর্মচর্চায় প্রতিবন্ধক হয় তাহলে ধর্মনিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকলে মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে। অতএব দুর্গাপূজা চলাকালীন আযান ও নামাজের সময় বাদ্য-বাজনা বন্ধ রাখার গৃহীত আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই। এ ব্যাপারে তড়িৎ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক: কলামিস্ট ও ইসলামী গবেষক
আইটি সচিব: রাবেত্বায়ে উলামায়ে আহলে সুন্নাত বাংলাদেশ।
shaifulnejamy@gmail.com
01626-364062