“গ্রাম বাংলা”
উম্মে হাবিবা চৌধুরী::
বৈশাখের উদ্দাম হাওয়া
এসেছে ফিরে বছর ঘুরে
পহেলা বৈশাখ
নববর্ষের প্রথম দিন,
গত হওয়া দিনের গ্লানিগুলো
মুছে যাক,
সুন্দর সময়গুলো স্মৃতি হয়ে থাক।
সবুজ শ্যামলা শস্যফলা
গ্রাম বাংলা
অপরুপ দৃশ্যমান
সোনালী রোদের সকালবেলা,
সূর্যাস্তের মায়াঝরা গোধূলির
রংমাখা রক্তিম আভা।
কবি নজরুলের
“আমার দেশের মাটি
ও ভাই খাঁটি সোনার
চেয়ে খাঁটি”
রবি ঠাকুরের সোনার বাংলা,
মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতার সনেট,
পল্লীকবি জসিমউদদীন এর
হৃদয়ের আকুতি-
“দুলাল আমার
জাদু আমার
লক্ষী আমার ওরে
আহা কি ব্যাথা মোর বাছা
আমি জানি
ছাড়িয়া যাইতে তোরে।”
জীবনানন্দ এর
নাটোরের বনলতা সেন
“আমার গ্রাম বাংলা
তুমি শতো কবির কাব্যচয়ন”
বয়ে চলা নদীর কলতানে
পাল তোলা মাঝির
ভাটিয়ালী সুর,
শুভ্র ধবল সম
বনে বনে ছেঁয়ে যাওয়া কাশফুল,
শিশির ভেজা দূর্বাঘাসে
বেদনা বিদূর কুমারীর
ভীরু প্রণয়সম অশ্রুজল।
আমার গ্রাম বাংলা
পাহাড়ি ঝর্না
সাগরের বুকে
উত্তাল ঢেউয়ে
মিশে যাওয়া কান্না।
মেঘমৃদুল দম্ভোলি হাওয়া
ঘনবর্ষায় নদীর দুকূল
ছাপানো বারিধারা।
নিস্তব্ধ রজনীর
সুরভীতে মগ্নতায়
আবিষ্ট হওয়া
ফুটন্ত রজনীগন্ধা।
আঁকাবাঁকা মেঠো পথে চলতে গিয়ে
ধূলিমাখা সবুজ ঘাসে
অনুভবে দোলা দেওয়া
মাটির সুধা গন্ধ মাখা
পরশখানা।
সবুজ বনান্তে ঝরা পাতার
মর্মর রিনিঝিনি গানে
বিচিত্র পাখির কূজনে
রাখালিয়া বাঁশির সুরে
মন উদাস করা দুপুর।
মা ও শিশুর মধুময় আলিঙ্গনে
ঘুমপাড়ানি গানের সমাহার,
রঙিন প্রজাপতির ডানায় ডানায়
সৌরভ ছড়ানো হাসনাহেনা
মধুকর মৌমাছির চাক দেওয়া
প্রলয় শিখা।
আমার গ্রাম বাংলা
লক্ষ শহীদের আত্মদানে পাওয়া
দেশমাতৃকা
আমার জন্ম ভিটা,
আবহমান বাংলার চির ঐতিহ্যর ধারক
ছয় ঋতুর আগমনী বার্তা
বৈচিত্র্যতায় ভরা পহেলা বৈশাখ,
স্বাগতম
শুভ নববর্ষ,
মানবিক মূল্যবোধে জেগে থাকুক
আমাদের প্রাণগুলো।
স্রষ্টার সৃষ্টিতে ছন্দময়িতা
করুণাময়ী স্রষ্টারই
অনন্য কৃপা,
শুকরিয়া।