খবরাখবর

হালদার রাউজান অংশে ৩২০ কোটি টাকার বেড়ি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ

আমির হামজা, রাউজান:: প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর পূর্ব পার্শ্বের রাউজান অংশে বেড়ি বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

ইতপূর্বে তারা এই নদীর হাটহাজারী অংশে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করেছে। হাটহাজারী অংশের এই বেড়ি বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বন্যা জলোচ্ছ্বাসের মত প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে এখন ওই উপজেলার শত শত কোটির সম্পদ রক্ষা পাচ্ছে।

উল্লেখ করা যেতে পারে হালদা নদীর পূর্বাংশ অর্থাৎ রাউজান অংশে বেড়ি বাঁধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা আর ঝড়, বন্যার মত সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে রাউজানে ব্যাপক হারে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন করা রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালবাট ধসে যায়, ভেসে যায় মাঠের ফসল, পুকুর দিঘির মাছ।

এছাড়া সৃষ্ট দুয়োগের পরবর্তী সময়ে লোকালয়ের জমে থাকা পানিতে পঁচা বর্জ্য প্রাকৃতিক এই মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রে গিয়ে পড়ে। এতে নদীর পানি মাত্রাতিরিক্ত দুষণে পড়ে জীব বৈচিত্রের উপর হুমকির সৃষ্টি করে।

হালদা পাড়ের সাথে থাকা উরকিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল বলেছেন বেড়ি বাঁধ না থাকায় রাউজানের মানুষ প্রতি বছর বহুমুখি ক্ষয়ক্ষতি শিকার হয়। এসব ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করে আসছেন নিজের উপজেলার মানুষের জানমাল রক্ষায় হালদা পাড়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের। তিনি এই প্রকল্প কিভাবে দ্রুত বাস্তাবয়ন করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে সার্বক্ষণিক মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করে চলেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায় গত অর্থ বছরের উন্নয়ন কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া পাউবোর হাতে প্রায় ছয় শত কোটির টাকার এক ফান্ড অব্যহৃত অবস্থায় রয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছেন অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এই ফান্ডের একটি অংশ হালদা পাড়ের রাউজানের দিকে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে খরচ হতে পারে তিন শত বিশ কোটি টাকার মত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় পাউবো এই প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ের পাঠিয়ে ্ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে।

মন্ত্রনালয় এটি গুরুত্বের সাথে নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড.জীবন কুমার সরকারকে প্রধান করে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটিও গঠন করেছেন।

জানা যায় গঠিত কমিটির সদস্যরা প্রকল্প এলাকা যেকোনো সময় পরিদর্শনে আসবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাঙ্গামাটি সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী তনয় কুমার ত্রিপুরা বলেন এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে গঠিত কমিটি যেকোনো সময় প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করবেন। তারা বেড়ি বাঁধ না থাকার কারণে কোথায় কিভাবে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা দেখে নিরুপন করবেন। পর্যবেক্ষণ রির্পোট মন্ত্রনালয়ে জমা দিবেন।

তিনি জানান পাউবোর প্রস্তাবে আপাতঃ মদুনাঘাট উপজেলার উরকিরচর থেকে কাগতিয়া পর্যন্ত বেড়ি বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকতে পারে হালদার সাথে যুক্ত আটটি খাল ও পাঁচটি স্লুইচ গেইট সংষ্কার কাজও।

এই প্রকল্প নির্মাণের কাজ শেষ হলে হালদা নদীর পাড়ের দুই উপজেলার অসংখ্যা মানুষের ঘরবাড়ি, হাটবাজার ও বিস্তীর্ণ এলাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাবে।

Please follow and like us:

Related Articles

Back to top button