মৎস্য ও জলজকৃষি গবেষণাখাতে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে—আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী ওয়াদুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, এমপি বলেছেন, দেশের আগামী প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে সরকার বিপুল সম্ভাবনাময় ‘মৎস্য ও জলজকৃষি’ গবেষণাখাতে অধিকহারে বরাদ্দ দিচ্ছে।
সরকারের এই সদিচ্ছাই প্রমাণ করে যে, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের দেশকে একটি উন্নত ও সম্মৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার কাজ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি, দেশের বৃহত্তর কল্যাণে, আমাদের ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে চেষ্টার মাধ্যমে বিদেশ থেকেও বেশি-বেশি বরাদ্দ আনতে হবে।
আজ (৮ জুন) সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনে ‘ফিশারিজ অনুষদ এবং বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ফোরাম’ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিসারিজ এন্ড অ্যাকুয়াকালচার কনফারেন্স- ২০২৪’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য ও জলজকৃষি’ একটি আকর্ষণীয় গবেষণা খাত। এই খাতের গবেষণা ও উন্নয়নে সমবায়ভিত্তিক চাষপদ্ধতি সুফল বয়ে আনবে। এজন্য প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। তবে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে- জলজ পদ্ধতিতে চাষ করতে গিয়ে দেশের সোনা-মাটির উর্বরতার ক্ষতি যেন না হয়।
প্রতিমন্ত্রী ওয়াদুদ বলেন, “‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ প্রবাদটা আমাদের ঐতিহ্যেরই অংশ। বাঙালির পাতে মাছ থাকবে না- তা হতে পারে না।“ দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করে জিআই পণ্য জাতীয় মাছ ইলিশ, ‘হোয়াইট গোল্ড’ চিংড়িসহ প্রায় কয়েকশ প্রজাতির মাছ বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ সুনামের সাথে প্রচুর রেমিট্যান্স আয় করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরও যোগ করেন, ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। মোট ইলিশ উৎপাদনের শতকরা ৮৬ ভাগই বাংলাদেশের দখলে। এছাড়া মিঠা পানির মাছ ও চাষের মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম তিন দেশের একটি।
‘নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য স্মার্ট অ্যাকুয়াকালচার এবং ফিশারিজ’ শীর্ষক প্রাতিপাদ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ও ফিসারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মন্ডল।
সম্মেলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডঃ গোলাম সাব্বির সাত্তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর মোঃ সুলতান উল ইসলাম ও প্রফেসর মোঃ হুমায়ুন কবির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মোঃ আলমগীর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) মহাপরিচালক মোঃ জুলফিকার আলী, ওয়ার্ল্ড ফিশ ইন্টারিমের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডঃ বিনয় কুমার বর্মন।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অনিলাভ কবিরাজ। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ফোরামের সভাপতি প্রফেসর জোয়ার্দার ফারুক আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ বিভাগের প্রফেসর আকতার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর মো. তারিকুল ইসলাম। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে।