ফটিকড়ির নারায়ণহাট-গাড়িটানা সড়কের বেহাল দশা
সড়কটির ফটিকছড়ির অংশজুড়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার বেহাল দশা। অধিকাংশ স্থান খানাখন্দ আর বড় গর্তে ভরা
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি: ফটিকড়ির নারায়ণহাট-নেপচুন-গাড়িটানা সড়কটির বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী।
সড়কটির সাথে মানিকছড়ি উপজেলা, নেপচুন চা বাগান, সেমুতাং গ্যাস ফিল্ড সহ ৮-১০ গ্রামের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়া স্বত্তেও সড়কটির ফটিকছড়ির অংশজুড়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার বেহাল দশা। অধিকাংশ স্থান খানাখন্দ আর বড় গর্তে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারী, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, যাত্রীসাধারণসহ পরিবহন চালকরা।
অন্যদিকে এ ৭ কিলোমিটার সড়কের খুলার পাড়া হাছি ড্রাইভার বাড়ি থেকে নেপচুন টিলা পাড়া পর্যন্ত ২ কি.মি কার্পেটিং দ্বারা নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার প্রায় ২ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো কাজ মেকাডম করাতেই পড়ে আছে। কয়েকবার অভিযোগ ও উঠেছে এ সড়কে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। কাজে বাঁধাও দিয়েছে স্থানীয় মেম্বারসহ কয়েকজন। তবে বিষয়টি তদারকি করে সঠিকভাবে কাজ আদায় করার কথা বলছেন স্থানীয় এলজিইডি অফিস।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাকি ৫ কি.মি সড়ক সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে কোথাও কোথাও পাকার চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। সড়কটির উপরের সকল ইট প্রায় উঠে গেছে।
তৈরী হয়েছে বড় বড় গর্তের। ইট ভেঙে ইটের গুড়ি গুলো বাড়িয়ে দিয়েছে ভয়াবহতার মাত্রা। পিলখানা, খুলার পাড়া, ত্রিপুরা পাড়া, নোয়াপাড়া, খামারবিটা, চুলারখিল, কালাপানি, সেমুতাং গ্যাস ফিল্ড, গাড়িটানা ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে চলাচল করতে হয়।
কিন্তু সড়কের বেহাল দশায় যান চলাচল প্রায় অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। একেকটা গর্ত যেন মরণফাঁদ। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার খানা-খন্দ পানিতে ভরে যায়। হাজার হাজার মানুষকে নানান প্রতিকূলতা আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এ সড়কে।
নোয়াপাড়া গ্রামের তোফায়েল মিয়া বলেন, ‘নারায়ণহাট-গাড়িটানা সড়কের বেহাল অবস্থা। একদিন গাড়িটানা গেলে বাড়িতে এসে ব্যাথার ওষুধ খেতে হয়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা হলে জনসাধারণ অনেক উপকৃত হবে।’
ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন কাজে এ সড়ক হয়ে যেতে হয়। রাস্তার জন্য ভাল কোন গাড়ি এ পথে চলেনা। মোটরসাইকেলই শেষ ভরসা। সড়কটি ভেঙে বড় বড় গর্ত হওয়াতে এদিক দিয়ে যাওয়ার সময় মানুষের খুবই দুর্ভোগ হয়। এখন একেকটা ভাঙন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।’
সিএনজি অটোরিকশা চালক মো: মাসুদ জানান, সড়কটি পুরোপুরি ভেঙে গেছে। কেউই সংস্কার করার উদ্যোগ নিচ্ছেন না। ভাঙা সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে কয়েকদিন পরপর অটোরিকশা নষ্ট হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে এ পথে যেতে হয়। দ্রুত সংস্কার হলে আমরা উপকৃত হবো।’
নারায়ণহাট ইউপির ৩নং ওয়ার্ড সদস্য জামাল উদ্দিন জানান, আমাদের এ সড়কের অবস্থা কেউ না আসলে বুঝতে পারবেনা। মানুষ চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি হচ্ছে। তার উপর ৭কিলোমিটার সড়কের যে ২কিলোমিটার বাজেট হয়েছে তার কাজও হচ্ছে নিম্নমানের। যেমন ইচ্ছা তেমন কাজ করছে। আমি কয়েকবার কাজে বাঁধাও দিয়েছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ এ সড়কের ২কি.মি কাজ সঠিক ভাবে হোক এবং বাকি আরো ৫ কিলোমিটার কাজও করার যেন উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আবু জাফর মাহমুদ বলেন- হাজার হাজার মানুষের নিত্যদিনের দূর্ভোগ নারায়ণহাট-গাড়িটানা সড়ক। ৭কি.মি সড়কের যে ২কি.মি সড়কের কাজ চলছে তাতে অনিয়ম হচ্ছে, এছাড়া বাকি ৫কি.মি সড়ক সংস্কারের জন্য আমি মাননীয় এমপি সহ সকলের কাছে অনুরোধ রাখছি।
এ প্রসঙ্গে ফটিকছড়ি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, ২ কি.মি সড়কের যে ঠিকাদার কাজ করছে সে বেশি ধীরগতি। চাপ দিলে ২দিন কাজ করে, আবার পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ করার জন্য। যে অভিযোগ এবং সমস্যা ছিল তা আমি গিয়ে সমাধান করে দিয়ে আসছি। বাকি ৫ কি.মি সড়কের কাজ প্রকল্পে প্রস্তাব করা আছে এখনো অনুমোদন হয়নি। ধীরে ধীরে ওটাও হয়ে যাবে।