খবরাখবর

মাটিরাঙ্গায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রতিবন্ধী নারী নিহতের ঘটনায় নেই কোনো অভিযোগ!

আবদুল আল মামুন, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বাক প্রতিবন্ধী জোহরা বেগম(৫৫) নিহতের ঘটনায় পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকলেও পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ হস্তান্তরের পর দাফন কার্য সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে শনিবার (২২ জুন) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার গোমতি বাজারের পুরাতন বিজিবি এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় হঠাৎ জাহের মিয়ার(৩০) দ্রুতগতির মোটরসাইকেল এসে জোহরা বেগমকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত জোহরা বেগম (৫৫) গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড পুরাতন বিজিবি ক্যাম্প এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার মেয়ে।

মোটরসাইকেল চালক জাহের মিয়া(৩০) গোমতি ইউনিয়নের একই ওয়ার্ডের মাস্টার পাড়া এলাকার মৃত ওহাব আলীর ছেলে।

সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, জোহরা বেগম প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাঁর বিয়ে হয়নি। তাঁর ভাইয়ের ছেলে আলাউদ্দিনের সাথে থাকতেন। কিন্তু তাকে আলাউদ্দিনসহ তাঁর পরিবার মানসিক নির্যাতন করতো, তাঁর নামে ১টি রেশন কার্ড ও সরকার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিলেও সেই ঘরে তাঁকে থাকতে দেয়া হয়নি, তাঁকে একটি ভাঙ্গা ঘরে থাকতে দিতো। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সে মারা যাওয়ার পরও তাঁরা নিরব। স্থানীয় কয়েকজন নেতা বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

নিহতের ভাতিজা মো. আলাউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় আমাদের পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। আর্থিক লেনদেনে সমঝোতা ও জোহরা বেগমকে মানসিক নির্যাতনের কথাটি সঠিক নয়। আমার ফুপুর নামে রেশন কার্ড আছে তার লোভও আমার নাই। আমি মোটরসাইকেল চালক সমিতির সভাপতি। জাহের আমার সমিতির সদস্য, তার কোনো ক্ষতি বা শাস্তি হোক এটা আমি চাই না। ইচ্ছে করে তো সে দূর্ঘটনা ঘটায় নাই। জাহেরের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল নাম্বারও নাই বলে তিনি জানান।

নিহত জোহরা বেগমের ভাই মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, সমাজের নেতারা এ বিষয়টি নিয়ে বসবে। এরপর সিদ্ধান্ত হবে অভিযোগ করা হবে না আপোষে সুরাহা হবে।

এ বিষয়ে গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতের বিষয়ে তাদের পরিবারের কোন অভিযোগ নেই। তা সত্ত্বেও পুলিশ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করেছে।

মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করে নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Please follow and like us:

Related Articles

Back to top button