খবরাখবর

রাঙ্গুনিয়ায় ৫০হাজার টাকায় কন্যা সন্তান বিক্রি করে দিলেন বাবা!

সিএনজি অটোরিকশা চালক বাবার স্বপ্ন ছিল এবার হলেও একটা পুত্র সন্তান হবে। কিন্তু এবারও পুত্র সন্তানের পিতা হওয়া স্বপ্ন পূরণ হয়নি সাদ্দামের। তৃতীয়বারও কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ায় অসন্তোষ ছিলেন বাবা সাদ্দাম। মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিষ্পাপ নবজাতক শিশুকে বিক্রি করে দেন পিতা।

জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ড কুলালপাড়া গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. সাদ্দাম ও স্ত্রী সুমি আক্তারের সংসারে দুটি কন্যা সন্তানের পর তৃতীয় মেয়ে সন্তান জন্মায়।

পুত্র সন্তানের আশায় তৃতীয়বারও কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ায় অসন্তোষ ছিলেন বাবা সাদ্দাম। পরে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের নিঃসন্তান এক দম্পতিকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তুলে দেয় বাচ্চাটিকে।

পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় (৩ জুলাই) বুধবার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে মরিয়মনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু এবং স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূর উল্লাহ’র মধ্যস্থতায় কন্যা শিশুটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেয়া হয়। ঘটনার সূত্রে জানা গেছে,  চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বাচ্চাটিকে তুলে দেয়ার সময় বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন পারভেজ হোসাইন নামের এক যুবক। তিনি ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি ভাইরাল হয়।

বিষয়টি নিয়ে সবদিকে তোলপাড় শুরু হলে, পরে বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা।

এব্যাপারে মরিয়মনগর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক হিরু বলেন, অভাবের কারণে সিএনজি অটোরিকশা চালক সাদ্দাম হাসপাতালের খরচ বাবদ কিছু সুবিধা নিয়ে মেয়েটিকে দত্তক দিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন মহৎ মানুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাকাগুলো থাকে দান করেন। বিষয়টি নিয়ে পরিষদে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে টাকাগুলো ফিরিয়ে দিয়ে আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে তুলে দিয়েছি।

বাবা মো. সাদ্দাম বলেন, হাসপাতালের বিল ওষুধ খরচসহ বিল এসেছে প্রায় ২৩ হাজার। যা আমার কাছে ছিল না। আমার আরও দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তৃতীয়টাও কন্যাসন্তান হওয়ায় বাধ্য হয়ে চিকিৎসা খরচ জোগাতে বাচ্চাকে খরচের বিনিময়ে নিঃসন্তান আত্মীয়কে দিয়েছি। এখন বাচ্চাকে ফেরত পেয়ে আমি অনেক খুশি।

গত ২৯ জুন অন্তঃসত্ত্বা সুমি চন্দ্রঘোনা জেনারেল হাসপাতালে দুপুরে সিজারের মাধ্যমে কন্যাসন্তান জন্ম দেন। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ছাড়পত্র পেয়ে নবজাতক শিশুটির মায়ের কোল বাদ দিয়ে ঠাঁই হয় দত্তক মা-বাবার কোলে। বিষয়টি ফেসবুকে জানাজানি হলে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় এবং ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় অবশেষে নিজ মায়ের কোলে ফিরল নবজাতক শিশুটি।

Please follow and like us:

Related Articles

Back to top button