আমিরাতে বিক্ষোভের ডাক দেয়া, ৫৭ বাংলাদেশীকে কারাদণ্ড
প্রবাসে বসে বাংলাদেশে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে উস্কানি এবং বিক্ষোভ করার দায়ে ৫৭ জন বাংলাদেশীকে কারাদণ্ড দিয়েছে আমিরাত আদালত।
এ ঘটনায় ৩জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এবং ৫৪ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছর জেল দিয়েছেন দেশটির আদালত।
“জানা গেছে, ২২ জুলাই আবুধাবির ফেডারেল আপিল আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। এই খবর জানিয়েছেন আমিরাতের সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতার মাঝে নিজ দেশের সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে আমিরাতে বিক্ষোভের ডাক দেয়া এবং দাঙ্গা উসকে দেয়ার অভিযোগে ওই তিন বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া অবৈধভাবে সেদেশে প্রবেশ এবং ‘সমাবেশে’ অংশ নেয়ায় আদালত আরও ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আদালত তাদের কারাবাসের মেয়াদ শেষে নির্বাসন এবং জব্দ করা সমস্ত ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দিয়েছেন।
গত শুক্রবার নিজ দেশের সরকারের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বেশ কয়েকটি রাস্তায় জমায়েত করেন কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি। এ সময় দাঙ্গা উসকে দেয়ার অভিযোগে তাদের একটি দলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইউএই’র অ্যাটর্নি-জেনারেল চ্যান্সেলর ডাঃ হামাদ সাইফ আল শামসি অবিলম্বে ওই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন এবং সন্দেহভাজনদের একটি ‘জরুরি বিচার’ এর জন্য রেফার করেন।
‘৩০ জনের একটি তদন্তকারী দলের তদন্তের পর আসামিদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়। জনসমক্ষে জড়ো হওয়া, অশান্তি উসকে দেয়া, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ডের অডিওভিজ্যুয়াল ফুটেজ রেকর্ড করা ও ছড়িয়ে দেয়াসহ এই ধরনের জমায়েত এবং বিক্ষোভের প্রচার করার প্রমাণ পান তারা।
আদালত একজন সাক্ষীর কথা শোনেন। যিনি নিশ্চিত করেন, আসামিরা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেশ কয়েকটি রাস্তায় বড় ধরনের মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। এর ফলে দাঙ্গা হয়, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, আইন প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি হয় এবং সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি বিপন্ন হয়।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে তাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশের আহ্বানে তারা সাড়া দেয়নি।
অপরদিকে আদালত-নিযুক্ত আসামিদের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন, আসামিদের সেখানে জমায়েতের কোনো অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ছিল না এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণগুলিও অপর্যাপ্ত। তিনি আদালতের কাছে আসামিদের মুক্তি দাবি করেন।
তবে, আদালত আসামিদের অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করেন।