কাপ্তাই প্রশাসনে সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ইউএনও মোঃ মহিউদ্দিন
অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই: রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদানের পর সফলতার সাথে ১ বছর পার করলেন বিসিএস (প্রশাসন) ৩৫ ব্যাচের মেধাবী ও চৌকস অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন।
গত ২০২৩ সালের ৩ আগষ্ট তিনি কাপ্তাই উপজেলায় যোগদান করেন। এক বছরের মধ্যেই তিনি তার কর্ম দক্ষতার মাধ্যমে উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে প্রিয় মানুষ হয়ে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
এছাড়া মেধা ও মননে একজন সুদক্ষ সরকারি প্রশাসনের ক্যাডার অফিসার হিসেবে ইউএনও মোঃ মহিউদ্দিন কাপ্তাই উপজেলায় অত্যন্ত সুদক্ষ প্রশাসনিক সমন্বয়, বিচক্ষণতার সাথে সদাশয় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তদারকি করে প্রশংসা অর্জন করেছেন।
এছাড়া ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচনও অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছেন কাপ্তাইয়ের এই ইউএনও। তিনি কাপ্তাই উপজেলার বাসিন্দাদের স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্টু দুইটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।
পাশাপাশি কাপ্তাই উপজেলায় ইউএনও এর কর্মসূচী হিসেবে তিনি বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, পাহাড় কাটা রোধে অভিযান, বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়নমুলক কার্যক্রম পরিদর্শন, সরকারি কাজের তদারকি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সহ বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক দিবসগুলো যথাযথ মর্যাদায় সুনামের সাথে পালন করে আসছেন।
তিনি ইতিমধ্যে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে রাঙামাটির পার্বত্য জেলায় শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সকল সরকারি অফিসারদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে শুদ্ধাচার পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। এজন্য রাঙামাটি জেলা প্রশাসন কতৃক তিনি সম্মাননা পেয়েছেন।
কাপ্তাইয়ের এই সফল ইউএনও এক বছরের মধ্যেই কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন দুর্গম প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে গেছেন। সেখানে বসবাসরত বিভিন্ন পাহাড়ী সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী এবং অসহায় মানুষদের সুখ দুঃখের খোঁজ নিয়েছেন। এবং যতটুকু পেরেছেন তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানও করেছেন।
এছাড়া পাহাড়ীদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রেখে উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চলেও প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মাচাং ঘর তৈরি করে বিভিন্ন অসহায় পরিবারকে উপহার দিয়েছেন। বিভিন্ন পাহাড়ী অঞ্চলের মানুষ যেন সরকারি সুবিধা বঞ্চিত না হয় সেজন্য তিনি বিশেষভাবে নজরদারিও রেখেছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী, সরকারি অফিসারদের তিনি এসব অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে এবং তাদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
সফলতায় এক বছর পার করার পরও এই অফিসার কাপ্তাই উপজেলাকে আরো সমৃদ্ধ করতে ইচ্ছাপোষণ করেছেন। তিনি এই প্রতিবেদকের নিকট তাঁর কিছু ভবিষ্যত পরিকল্পনাও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এই কাপ্তাই উপজেলাকে নিয়ে আরো কিছু কাজ করার পরিকল্পনা আছে। বিশেষ করে কাপ্তাই উপজেলাকে পর্যটনসমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই। পর্যটকদের কাছে কাপ্তাই উপজেলাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।
পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও দ্রুত সুযোগ- সুবিধা পাওয়ার জন্য একটি ইনফরমেশন বুথ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া কাপ্তাই উপজেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে চাই। কাপ্তাইয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিশেষ করে দুর্গম অঞ্চলে পানির সমস্যা নিরসন করা, বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহনের পরিকল্পনা আছে। এছাড়া শীঘ্রই কাপ্তাই উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবো এবং সেখানের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করার চেষ্টা করবো। কাপ্তাই উপজেলায় যেন কোন শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে বা কারো লেখাপড়া বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।
সর্বোপরি কাপ্তাই উপজেলার সকল শ্রেণী -পেশার মানুষের উন্নয়নে বিভিন্ন কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করতে চাই। তিনি আরো বলেন, এই ১ বছরে কাপ্তাইয়ের জনসাধারন, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করে আসছে। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আগামীতেও কাপ্তাই উপজেলার সার্বিক উন্নয়নে সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।