রাউজানে কৃষকদের স্বপ্ন জাগাচ্ছে কফি চাষে
রাউজানের কফি বাগানে আসতে শুরু করেছে ফলন
আমির হামজা, রাউজান: কফি উৎপাদনে ভিয়েতনামের সুনাম রয়েছে সারাবিশ্বে। সেই কফি চাষ এখন বাংলাদেশে হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়ছে কফি চাষের আগ্রহ।
এবার কফি চাষে আগ্রহ বাড়ছে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার সৌখিন কৃষক ও তরুণ উদ্যোক্তদের মাঝে। কয়েকবছর আগে রোপণ করা কফি গাছে ফল ধরা শুরু হয়েছে। কফি গাছে ছোট ছোট কফিতে ভরপুর রাউজানের অনেক বাগান। নভেম্বর মাসে বাগানে ধরা কফিগুলো পরিপক্ক হবে বলে জানান কৃষকরা। এছাড়া কফির পাশাপাশি চাষ হচ্ছে কাজুবাদামের।
রাউজান উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে কফি ও কাজুবাদামের বাগান রয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প আওতায় কৃষকদের চারা সারসহ যাবতীয় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে কৃষি বিভাগ থেকে।
হলদিয়া, ডাবুয়া, কদলপুর ও পাহাড়তলী ইউনিয়নে ২০টি কফি বাগান সৃজন করেছেন ২০জন কৃষক। ২০টি বাগানে প্রায় আড়াই হাজার গাছের চারা রয়েছে। এসব চারা থেকে কফি উৎপাদন হবে। অন্যদিকে ৫টি ইউনিয়নে ২৫টি কাজু বাদামের বাগান সৃজন করা হয়েছে। বাগানগুলোতে প্রায় তিন হাজার কাজু বাদামের চারা রোপণ করা হয়।
কৃষক কমরু উদ্দীন বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগরে সহযোগিতায় গত দুই বছর আগে আমি ৩০ শতক জমিতে কফি গাছের চারা রোপণ করেছিলাম। ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে প্রতিটি গাছে ফলন দিতে শুরু করেছে।
তিনি জানান ৩০ শতক কপি বাগান থেকে বছরে অন্তত দুইশ কেজি কফি উৎপাদনের আশা করছেন তিনি। বর্তমানে প্রতি কেজি কফির দাম ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলাম বলেন, পাহাড়তলী এলাকার মহামুনি গ্রামের পাহাড়ি এলাকায় এক তরুণ উদ্যোক্তা কফি চাষ করেছে। প্রথমে লাগানো বেশকিছু গাছের চারা মারা গেলেও। পরবর্তী লাগানো কফি গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে।
পাহাড়তলী ইউনিয়নের বিপ্লব বড়ুয়া নামে এক তরুণ উদ্যোক্তা প্রায় দু’শ বেশি কফি গাছের চারা রোপন করেছেন। তার বাগানে এখন ফুলেফলে ভরপুর।
এ ব্যাপারে রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুম কবির বলেন, কফি ও কাজু বাদাম উৎপাদন বৃদ্ধিতে গাছের চারা, সার প্রদানসহ কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সম্প্রতি কফি উৎপাদন পরবর্তী পাম্পিং করার জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে উন্নতমানের মেশিন প্রদান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে বাগান সৃজনে পরামর্শ সেবা প্রদান করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন বাগানে কপি উৎপাদন শুর হয়েছে। তবে কাজু বাদাম ফলন দিতে শুরু করলেও এখনো পুরোপুরিভাবে উৎপাদন শুরু হয়নি। পুরোপুরো উৎপাদনে গেলে কৃষকেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে।