ফটিকছড়িতে ভয়াবহ বন্যা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি: ফটিকছড়িতে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন।
হালদা, সর্তা খাল, ধুরুং খাল,ফটিকছড়ি খাল,মন্দাকিনী খাল,গজারিয়া খাল,তেলপারি খাল,কুতুবছড়ি খাল,লেলাং খাল সহ বিভিন্ন খালের বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করছে এলাকায়। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাগণ। শত শত বাড়ি ঘর এখন পানির নিচে।
উপজেলার ফটিকছড়ি পৌরসভা,নাজিরহাট পৌরসভা,সুন্দরপুর,পাইন্দং
,হারুয়ালছড়ি,সুয়াবিল দাঁতমারা,বাগানবাজার,নারায়ণহাট, ভূজপুর,লেলাং,সমিতিরহাট,রোসাংগিরী,জাপতনগর,বক্তপুর,নানুপুরসহ উপজেলার সব ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে প্লাবিত হয়েছে।
চট্টগ্রাম-খাগগাছড়ি সড়ক,
গহিরা-হেয়াকো সড়ক, নাজিরহাট-কাজিরহাট সড়ক, কাটিরহাট-সমিতিরহাট-আজাদীবাজার সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানিতে ডুবে আছে। এছাড়া বিভিন্ন গ্রামীন সড়ক পানিতে ডুবে এবং পানির স্রোতে ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত একর চাষের জমি,পুকুর,মাছের প্রজেক্ট,পোল্ট্রী ফার্ম। বিভিন্ন হাটবাজারে সৃষ্টি হয়েছে জলবদ্ধতা। বন্ধ রয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য।
লেলাং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ইফতেখার উদ্দিন মুরাদ বলেন,আমাদের এলাকায় ফটিকছড়ি খালের বড় বাঁধ ও কুতুবছড়ি খালে সুইসগেট এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে এলাকায় পানি প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের লেলাং ইউনিয়ন-এ ৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
নাজিরহাট পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন,আমার এলাকার রশিদা পুকুর পাড়স্থ এলাকার হালদা নদীর বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে প্রায় ৩০০ পরিবার পানি বন্দি হয়ে আছে। মাইকিং করে অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে বন্যা, জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধ্বস পরিস্থিতির জন্য খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।বন্যা কবলিত এলাকাবাসীর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক গঠিত হয়েছে ২০ টি ইউনিয়ন মেডিকেল টীম ও ৫ টি সদর মেডিকেল টিম। নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃক টীম গঠন করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রন কক্ষে দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প অফিসার আবুল হোসেন জানান,রাতে বিভিন্নস্থানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হলেও সকাল থেকে তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় এখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বন্যা পরিস্থিতি।বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য কোন রকম ত্রাণের বরাদ্দ এখনো হয়নি বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, খালের বাঁধ ভেঙ্গে ও প্রবল স্রোতে পানি উপচে ফটিকছড়ির বিভিন্ন স্থানে প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শন করেছি। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবরাখবর রাখছি। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃক টীম গঠিত হয়েছে।