খবরাখবর

ফটিকছড়িতে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি: ফটিকছড়িতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা হয়েছে।বন্যায় বসতবাড়ি,রাস্তাঘাট,কৃষি,মৎস্যসহ বিভিন্ন খাতে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অংকে প্রায় ৫০৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা।

৩০ আগষ্ট উপজেলা প্রশাসন একটি ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রকাশ করে।

তালিকায় ৩৯০ বর্গ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়নগুলো হচ্ছে সুন্দরপুর, হারুয়ালছড়ি, নাজিরহাট পৌরসভা, সুয়াবিল ও ভুজপুর।

আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে পাইন্দং, নারায়নহাট, দাঁতমারা, বাগানবাজার সমিতিরহাট, রোসাংগিরী, লেলাং, নানুপুর, ধর্মপুর, বক্তপুর, জাফতনগর, কাঞ্চননগর, আব্দুল্লাপুর, খিরাম ও ফটিকছড়ি পৌরসভাসহ ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়ন সংখ্যা মোট ১৮ টি ও পৌরসভা ২ টি।

এসব ইউনিয়ন ও পৌরসভার ক্ষতিগ্রস্থ জনসংখ্যা১ লাখ ৫০ হাজার জন। এতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ৩০ হাজার ২০০ টি।

দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য
আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৬৫ টি। দুর্যোগে পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মৃতের সংখ্যা ৫ জন। দুর্যোগে আহতের সংখ্যা ২০ জন। দুর্যোগে উদ্ধারকৃত পরিবার সংখ্যা ৬ হাজার ৫০০ জন।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে,
বসতঘর সম্পূর্ন ধ্বসে পড়ে ৬০০ টি, আংশিক ৪ হাজার ৮০০ টি যার ক্ষয়ক্ষতি ৯৬ কোটি টাকা,কৃষি খাতে ক্ষতি ১২০ কোটি,মৎস্য খাতে ক্ষতি ৩৮ কোটি,রাস্তা, ব্রীজ/কালভার্ট ক্ষতি হয়েছে ব্যপক ভাবে,স্থানীয় প্রকোশল অফিসের হিসাবে এ খাতে ক্ষতি ২২৩ কোটি,হালদা,ধুরুং,সর্তাসহ নদী খালের বিভিন্নসস্থানে বাঁধের ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ক্ষতির হিসাবে ১৫ কোটি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের হিসাবে টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন ১৪ কোটি টাকা,প্রাণী সম্পদ বিভাগ (হাঁস, মুরগি, ঘাসের প্লট, দানাদার খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত কাচাঁ খাদ্য, খামার) যার আর্থিক ক্ষতি ১ কোটি ৬৫ লাখ ৮৫ হাজার ২০০ টাকা।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের হিসাবে (বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজ) ৮৮ লক্ষ টাকা।বিদ্যুৎ বিভাগ (ট্রান্সফরমার, বৈদ্যুতিক খুঁটি, বৈদ্যুতিক লাইন) ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সর্বমোট ক্ষতি প্রায় ৫০৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা।

ভয়াবহ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্টের। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ ২২৩ কোটি টাকা দাড়িয়েছে। ক্ষতির পরিমাণে দ্বিতীয় কৃষি।

উপজেলায় জমি প্লাবিত হয়েছে ২০ হাজার ৬১১ হেক্টর। ৩০ হাজার ৪ শত ৬৪ জন কৃষকের শাক-সবজি, ধানসহ ১২০কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সম্প্রতি অতিবৃষ্টির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় ফটিকছড়ি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট,মাছের প্রজেক্ট, ক্ষেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টাকার অংকে এ ক্ষতির পরিমাণ ৪৭৬ কোটি টাকার সমপরিমাণ। আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবো।’

Please follow and like us:

Related Articles

Back to top button