রাঙামাটিতে চাঁদাবাজি বন্ধের আবেদন জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ
স্টাফ রিপোর্টার: ৪ সেপ্টেম্বর বুধবার রাঙামাটিতে চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নিকট লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ , রাঙামাটি।
বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর নতুন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি, এ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথে আমরা যে এসেছি তা কিন্তু খুব সহজে হয়ে যায়নি, বৈষম্য ও কোটাবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রায় একহাজার জন মানুষের প্রাণ গেছে।
সংখ্যাটা যদি আমরা হিসাব করি মহান মুক্তিযুদ্ধ বাদে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন পরিবর্তনের জন্য বা কোন সংগ্রামের জন্য এত আত্মহতি দিতে হয়নি।
বাংলাদেশে এমন একটি সরকার গত ১৫ বছর ধরে চরম কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠা করে ছিলো সেই স্বৈরাচারকে উৎখাত করার জন্য ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে নতুন একটি বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুছ এর নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কার কাজ চলছে। রাঙামাটিতে বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজও রাষ্ট্র সংস্কার কাজে নিয়োজিত আছেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় কাঠ, মাছ, বাঁশ, গবাদি পশু পালন, কৃষিপণ্য ও মৌসমী ফলের চাষাবাদের ওপর এই এলাকার ৮০% মানুষের জীবন-জিবীকা নির্বাহ করতে হয়।
স্থানীয় জনসাধারন বছরের পর বছর ধরে একটি সিন্ডিকেট এর হাতে জিম্মি হয়ে আছে। পাহাড়ে সকল ক্ষেত্রে অবৈধ চাঁদাবাজী নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর পরিবর্তীত বাংলাদেশে আর কোন চাঁদাবাজ যাতে জন্ম না নেয়, বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ প্রত্যাশা করে।
বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ আরো জানান, রাঙামাটি জেলা শহরে বসে রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির নামে প্রতিনিয়ত সাধারন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ট্রাকপ্রতি কাঠের জন্য ১৪ হাজার টাকা করে বছরের পর বছর ধরে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জোত মালিক ও রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির নাম ব্যবহার করে সাধারন কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি-কোটি টাকার চাঁদা আদায় করে স্থানীয় চাঁদাবাজদের হাতে তুলে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। সেই সাথে বনবিভাগ এর বিরুদ্ধেও কয়েক স্তরে ঘুষ বাণিজ্যর কথাও শোনা যায়।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট সমুহ চিহ্নিত করে সমুলে এর চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ স্থানীয় সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সকল গোয়েন্দা সংস্থা সমুহ, জেলা প্রশাশন এবং বনবিভাগের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ রাঙামাটিতে চাঁদাবাজি বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন রিজিয়ন কমান্ডার, ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা বরাবর। আর রাঙামাটিতে চাঁদাবাজি বন্ধের আবেদনপত্রে সদয় অবগতি ও কার্যার্থে অনুলিপি কর্ণেল জিএস, ডিজিএফআই শাখা, ডেট কমান্ডার, এএসইউ শাখা, বন সংরক্ষক, রাঙামাটি সার্কেল, জেলা প্রশাসক, জোন কমান্ডার, সদর জোন, পুলিশ সুপার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা বরাবর।
বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ সংগঠকরা নিজেরা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদনপত্র এবং অনুলিপির কপি কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ, রাঙামাটির সহ সমন্বয়ক জুঁই চাকমা, উন্নয়ন কর্মী মো. নাছির উদ্দিন, ব্যবসায়ী রনি তঞ্চঙ্গ্যা, বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ এর সদস্য রিন্টু চাকমা ও এমিলি চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।