সিরাজগঞ্জে তালগাছবীজ রোপণ করে প্রশংসা ভাসছেন চিকিৎসক
আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে বজ্রপাত ঠেকাতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়, বায়ু দূষণরোধে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় আট হাজার তালগাছের চারা রোপণ করেছেন বৃক্ষপ্রেমী আবুল কালাম আজাদ এবং চিকিৎসক তছির উদ্দিন সেখ।
গত ২০০৮ সাল থেকে আজ অবধি পর্যন্ত বিশেষ করে সদর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দু’পাশে, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ গুরুত্বপূর্ণফাকা স্থানে প্রায় ১৫ যাবত তালগাছের চারা এবং অন্যগাছের চারা লাগিয়ে আসছেন। তালগাছ রোপনের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী মানুষদের এই উপকারী বৃক্ষটি রোপনের জন্য নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
জানা যায় যে, আবু কালাম আজাদ, পিতা- মরহুম রহমতুল্লাহ তালুকদার, সিরাজগঞ্জ পৌরএলাকার সয়াধানগড়া মধ্য পাড়ার বাসিন্দা তিনি শহরের ২ নং খলিফা পট্রিতে নিপুণ টেইলার্স স্বত্বাধিকারী দর্জির কাজে শত ব্যস্ততার মধ্যে দিয়েও রোপণের পর পরই গাছগুলো পরিচর্যা করতেও ভুলে যান না তিনি।
অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ পৌরএলাকার সয়াধানগড়া উত্তর ভাসানী রোডের বাসিন্দা চিকিৎসক তছির উদ্দিন সেখ পেশায় চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তিনি একজন সাদা মনের, সাহিত্যমনা মানুষ, বৃক্ষ প্রেমিক তিনিও রাস্তার ধারে ফাঁকা স্হানে তালের বীজরোপন সহ বিভিন্ন বৃক্ষের চারাগাছ রোপণ করে আসছেন যুগ যুগ ধরে নিজ বাড়িতে ও বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগাইয়াছেন ।
চলতি সেপ্টেম্বর -২০২৪ মাসের শুরু করে সোমবার সকালে দিনব্যাপী সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাজিপুর মহাসড়কের নতুন ভাঙ্গাবাড়ি হতে রাস্তার ধারে এবং নতুন ফুলবাড়ি সড়কে, বহুলী ইউনিয়ন ব্রাহ্মখোলা সড়কে রাস্তার দু’ধারে তালের বীজ রোপন করেন।
তালবীজ রোপনকারী আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলায় থেকেই বৃক্ষরোপণের প্রতি আন্তরিকতা ও অন্যান্য গাছের তুলনায় তালগাছটি বজ্রপাত ঠেকাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে বলে তা দেখে প্রথমে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম। পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি বিপদজনক বজ্রপাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য ২০০৮ সালে তাল গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।
এ পর্যন্ত ৮ হাজার তালবীজ সংগ্রহ করে সেগুলো গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন স্থানে লাগিয়েছি, নিয়মিত পরিচর্যার কারনে প্রায় গাছগুলিই বেড়ে উঠেছে যা এখন দৃশ্যমান। শুধু তাই নয় বাসা বাড়ী, হোটেল ও নিজ উদ্যোগে তালের বীজ ক্রয় করে সরকারি কিংবা কারো ব্যক্তিগত জায়গা যেখানে খালি পেয়েছি সেখানে এই মানব সম্পদ রক্ষায় তালগাছ লাগিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, জায়গা কার সেটা দেখার বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে গাছ লাগানো। নিজের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যই বৃক্ষরোপণ করছি।
এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, আমি এই জেলায় আসার আগে বজ্রপাত রোধক তালগাছ রোপণসহ বিভিন্ন সময় বৃক্ষরোপণে অবদান রাখছেন, আবুল কালাম আজাদ। এটি অত্যন্ত উপকারী একটি বৃক্ষ যা মানব সম্পদ রক্ষায় বিরাট ভূমিকা রাখে।