ফিচার

রাউজানে সফল নারী উদ্যোক্তা জ্যোতির পথচলার গল্প

নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জ্যোতি

আমির হামজা, রাউজান: রাউজানের মেয়ে ফাতেমা তুজ জোহরা জ্যোতি। একসময় পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। যখন দেশে করোনা শুরু হয় তখনই বন্ধ হয়ে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

যখন ঘরে বন্ধী অবস্থায় ছিলেন জ্যোতি উদ্যোগ নেন কেক তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করবেন। নিজের ইচ্ছা আর মনোবলকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে (ডেইলি ফ্রেশ) নামে পেইজ খুলে সেখানে তার কেকের ব্যবসায় শুরু করেন। শুরুতে কেকের অর্ডার কম হলেও সময়ের সাথে সাথে জ্যোতির কেক এর চাহিদা বাড়ে সবার কাছে। বর্তমানে ঘরে কেক বানিয়ে তাঁর একটি আয়ের উৎস হয়েছে।

তিনি কেক বিক্রির পাশাপাশি এলাকার বেকার তরুণ উদ্যোক্তাদের আত্মনির্ভরশীল করতে দিয়ে যাচ্ছেন প্রশিক্ষণ। কিভাবে একটি মানসম্মত কেক তৈরি করতে হয় সেই প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন বেকিং কোর্সে। অনেক বেকার তরুণী জ্যোতির কেক তৈরি কোর্স শেষ করে এখন তারাও অনলাইন ও সরাসরি ঘরে বসে কেক বিক্রি করছেন।

সফল নারী উদ্যোক্তা ফাতেমা তুজ জোহরা জ্যোতি কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই কিছু একটা আমার করার স্বপ্ন ছিল। নিজেকে স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে আমি হোম মেইড ফুড এর ব্যবসা শুরু করি। এখন অবশ্য কেক বেশি বিক্রিয় হয়, তবে মাঝে মাঝে পিজ্জা এবং শর্মাও ডেলিভারি দেন।

তিনি আরো জানান, আমার কেক ডেইলি ফ্রেশ নামক ফেইসবুক পেইজ থেকে মানে অনলাইনে বেশি বিক্রি হয়। পাশাপাশি পরিচিত লোকজন সরাসরি ফোনে কেক অর্ডার দেয়। বর্তমানে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারীসহ চট্টগ্রাম শহর জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় হতে কেক অডার আসে। দৈনিক ৩ থেকে চারটি কেক ডেলিভারি হয়। সময়ে সময়ে এরচেয়ে বেশি ডেলিভারি হয়। আমি ভালো সাড়া পাচ্ছি।

তিনি কেক শিখানোর ক্লাস করান। এতিমধ্যেই ৯ম ব্যাচ প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ করেছেন।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত তার কাছে যারা কেক বানানো শিখেছে তারা অনেকে উদ্যোক্তা হিসেবে সফলভাবে তাদের নিজ নিজ ব্যবসা পরিচালনা করছে বলে জানান। জ্যোতি রাউজান পৌরসভার মুন্সির ঘাটার তার বাড়ি। ৪ বছরেই জ্যোতি এখন সমাজে সফল একজন উদ্যোক্তা। তার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান নিজের কেকের মান আর কোয়ালিটি প্রমাণ করে।

সফল এই উদ্যোক্তা বলেন, আমার হাতের ঘরে তৈরি করা কেকের মান আর স্বাদ কাস্টমাররা নিজেরাই প্রশংসা করেন, এতেই আমার অনেক বেশি আনন্দ লাগে। তবে আমার কেক সবাই যেভাবে পছন্দ করেন, কেকর মান বজায় রাখতে আমি সবসময় চেষ্টা করি আর এটাই আমার দায়িত্ব মনে করি।

তিনি আরও বলেন যারা এই কাজে আসতে চান, ভালো করে কাজ শিখে বর্তমান অনলাইন বাজারে দাঁড়াতে হবে। যতোবেশি প্রচার করা যাবে ততই সফলতা আসবে। তবে সবসময় নিজের তৈরি পণ্যের মান বা কোয়ালিটি অন্যদের চেয়ে আলাদা করা যাই ততই বাজারে নিজের তৈরি কেকর চাহিদা বাড়বে।

Please follow and like us:

Related Articles

Back to top button