খাগড়াছড়িতে সহিংস ঘটনায় ২টি মামলা দায়ের, তদন্ত কমিটি গঠন, ১৪৪ধারা বহাল
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে(৪৮) পিটিয়ে হত্যার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রোজনিন চৌধুরীকে প্রধান করে ৪সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি সদর থানায় দু’টি মামলা হয়েছে। জেলা সদর ও পৌর এলাকায় ১৪৪ধারা বলবৎ রয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিহত শিক্ষকের মরদেহ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তার পরিবারের সদস্যদের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
খাগড়াছড়ির সকল সড়কে যান চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা খাগড়াছড়িতে ১৪৪ধারা থাকলেও জনজীবন স্বাভাবিক, দোকানপাট খোলা রয়েছে।
মঙ্গলবার জেলা শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়কের কেএসটিসি হাসপাতালসহ অন্তত ২০দোকানে ভাংচুর লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা।
পানখাইয়া পাড়া সড়কের চা দোকান, আনন্দ নগর রাস্তার মাথা এখনো পড়ে আছে সহিংসতার চিত্র। সড়কের ওপর পড়ে আছে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।
কেএসটিসি হাসপাতালের ম্যানেজার মো. পারভেজ ইসলাম বলেন, দুপুর থেকে হাসপাতাল বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তারপরও দুর্বৃত্তরা হাসপাতালে হামলা করে ভাংচুর করেছে।
এছাড়া মহাজন পাড়া এলাকায় অন্তত ১০টি দোকানে ভাংচুর করা হয়।
শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত দোকানপাট ঘুরে দেখেছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে সহিংসতার ঘটনার বিবরণ শুনেছেন তারা।
এদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও পৌর এলাকায় জারি করা অনির্দিষ্টকালের ১৪৪ ধারা বলবৎ আছে বলে জানান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। এ ঘটনা তদন্তে ৪সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি সদর থানায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি ধর্ষণ মামলা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা করেছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। বাজারের কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের টহল রয়েছে।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়িতে মঙ্গলবার দুপুরে এ ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক স্কুলশিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি জেলা শহরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। দুপুরে ওই স্কুলের অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়ি বাঙালি সম্প্রদায়ের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় সদর উপজেলায় এখনো ১৪৪ধারা জারি আছে।