যে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না, মাওলানা মো.রফিকুল ইসলাম খান
আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জ: বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, যে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না। পৃথিবীতে ফিরে আসার নজিরও নাই। গত ১৬ বছরে পূরো বাংলাদেশকে একটি বন্দিশালা বানিয়েছিলো আওয়ামীলীগ। বিনা দোষে কলাকৌশল করে বিভিন্ন নাটক সাজিয়ে আমাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ডান্ডা বেরি পরিয়ে আমাদেরকে আদালতে হাজির করা হতো। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে যারাই সংগ্রাম করতে চেয়েছে তাদেরই ত্রুটি চেপে ধরা হয়েছিল। তারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তুু মানুষ হত্যা করে তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। এদেশের মানুষ গণশত্রুদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ তুলেছিলো।
গত জুলাই-আগস্টে হাজার হাজার ছাত্র, জনতাকে হত্যা করেছে। তাদের একজন নেতা আস্ফালন করে বলেছিলো ছাত্র-জনতা আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। একজন বিচারপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে ফাঁসি দিয়ে টকশোতে আস্ফালন করে বলেছিলেন “সাঈদিকে ফাঁসি দিয়ে আসলাম”। কিন্তুু তাদের পরিনতি কি হয়েছে তা সারা পৃথিবী দেখেছে। তিনি বলেন, অহংকার ভালো নয়, যারা অহংকার করে কথা বলতেন তারা এখন কোথায় ? তারা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
হঠাৎ সচিবলায়ে আগুন এটা বর্তমানকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের মুখ্য সচিবদের দপ্তরে রক্ষিত হাজার কোটি টাকা লুট-পাট ও পাচারের তথ্যবহুল ফাইল ছিল তা নিঃশেষ করতেই এই আগুন।
আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে সুষম বন্ধুত্বের সম্পর্ক চাই। তবে কারও প্রভুত্ব মেনে নেওয়া হবে না, এদেশের মানুষ জেগে উঠতে শিখেছে। জেগে ওঠা জনগন কারও প্রভুত্ব মানবে না।
যে ট্রাইব্যুনালে ইসলামী আন্দোলনের সিপাহীশালার মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ আমাদের অনেক নেতাকে হত্যা করেছে সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করতে হবে ইনশাআল্লাহ ।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কাজিপুর উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে, উপজেলার আলমপুর চৌরাস্তা গোলচত্বরে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম খান। তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন যে, দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে কেনা হয় বন্দুক রাইফেল, পিস্তল ও গুলি দেশ রক্ষার জন্য
অথচ দেশের সাধারণ মানুষ, নীরহ জনগণকে গুলি করেছে হাসিনার পেটুয়া বাহিনী। জনগনের বুকে গুলি মেরে অবৈধ সরকারকে যারা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। লুটপাটকারী এসব চোরদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ঢিলেঢালা ভাবে দেশ চালালে হবে না। শক্ত হাতে দেশ চালানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায় না কিন্তুু ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে চায়। পৃথিবীতে নবী আম্বিয়া (আঃ) কে ইসলাম বিজয়ী করার দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছিল। আমরা সেই নবী রাসূলদের পথ অনুসরণ করতে চাই।
ইসলামী কল্যান রাষ্ট্রে আমরা রাজাও হবো না, জনগণকে প্রজাও বানাবো না। তিনি আরও বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা সব কাজই করতে পারবে। তাদের জন্য থাকবে আলাদা সু-ব্যবস্থা । বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী আগামী দিনে এদেশকে একটি মানবিক ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরীতে চেষ্টা চালাচ্ছে। যেখানে চাদাঁবাজী ও দখলকারিদের ঠাঁই হবে না।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কাজিপুর উপজেলা শাখা’র সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেক্রেটারী অধ্যাপক মোঃ আরমান হোসেন ও কাজিপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হাসান মনসুর এর যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা শাহিনুর আলম, ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড.মোঃ হেলাল উদ্দিন, পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রহিম প্রমুখ ।
এ বিশাল জনসভায় সন্মানিত অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্যে রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারী অধ্যাপক মোঃ জাহিদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা মোঃ আব্দুস ছালাম, পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ আব্দুল লতিফ, রায়গঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুস সাত্তার, শেরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ দবিউর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ ছাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
এ বিশাল জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর হাজার হাজার নেতাকর্মীরা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। কানায় কানায় লোকেলোকারণ্যে পরিপূর্ণ হয় এলাকা।