চট্টগ্রামের মেজবানের সুনাম দেশজুড়ে, নাম শুনলেই জল আসে জিভে!
আমির হামজা,:: মেজবানি খাবার মানে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সুনাম রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তর জেলা শহর চট্টগ্রামের। আজ থেকে কয়েকশত বছর ধরে মেজবানি খাবারে পরিবেন শুরু হয় চট্টগ্রামের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জ থেকে শহর পর্যন্ত। চট্টগ্রামের ছোট-বড় সকল বয়সী মানুষের কাছে মেজবান সবচেয়ে প্রিয়। কারণ চট্টগ্রামের মেজবানি মাংস স্বাদ অন্যরকম। আর এই মেজবানের নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে যে কোন মানুষের।
মেজবানের দাওয়ার হলে চলবে যতোটাকা গাড়ি ভাড়া হোক এতে কোন সমস্যা নেই। মেজবান খেতে ছুটে যান আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে। চট্টগ্রামের মানুষ মেজবানকে বলে মেজ্জান। আজ থেকে অনেক বছর আগে মেজবান খাওয়া হতো মাটির পাত্রে বা মাটির তালায়। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে পরিবেশনা, বর্তমানে টেবিল চেয়ারে বসিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া মাটির পাত্র বাদ দিয়ে নানা রকম ডিজাইনের থালায় খাওয়ার অয়োজন করা হচ্ছে। তবে এখনো সেই পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মাটির তালি দিয়ে চট্টগ্রামের কিছু কিছূ নামিদামি হোটেল ও রেস্তোরাঁ এই মেজবানি খাওয়ার পরিবেশন করতে দেখা যায়।
“দেশের সকল জেলার মানুষ চট্টগ্রামের মেজবান খাওয়ার জন্য একরকম পাগল। কারণ দেশজুড়ে চট্টগ্রামের মেজবানের কথা সবার মুখে মুখে শোনা যায়”
এছাড়াও চট্টগ্রামের বিয়ের অনুষ্ঠানের খাবারের মেনুতে রয়েছে আরও বিভিন্ন রকম স্বাদের খাবার বিশেষ করে গরুর মাংস, গরুর ভুনা, পোলাও, মুরগি, কোরমা, কাবাব, চিংড়ি মাছ, মাছ, ডিম, দইসহ ইত্যাদি।
চট্টগ্রামের মেজবান সাধারণত মানুষ মারা গেলে তার উদ্দ্যেশে জিয়াফত/ফাতেহা, কুলখানি, বিবাহসহ চট্টগ্রামের অন্যান্য অনুষ্ঠানে এই ঐহিত্যহাসিক মেজবানি খাবার তৈরি করা হয়ে থাকেন। এলাকার পাড়া প্রতিবেশীদের আমন্ত্রণ করে খাওয়র নামই হচ্ছে চট্টগ্রামের মেজবান বা চাটগাঁইয়া মেইজ্জান।
তবে চট্টগ্রামের এই মেজবান সময়ের সাথে সাথে এতোবেশি জনপ্রিয় যে, শুধু এই জেলায় নয় চট্টগ্রামের বাইরে বিভিন্ন জায়গাতে আয়োজন বরা হচ্ছে এই মেজবানি খাবার গুলো। বর্তমানে চট্টগ্রামের এই মেজবান ছড়িয়ে পড়েছে ওমান, দুবাই, সৌদি আরব, কাতার, আমেরিকাসহ ইউরোপের দেশ গুলোর মধ্যে তাকা প্রবাসী বাঙালিদের মাঝে।
সাদা ভাতের সাথে বাবুর্চির হাতে তৈরি করা গরুর মাংসর স্বাদ যেন অন্যরকম। জানা য়ায়, বাবুর্চিরা বিভিন্ন প্রকার মসলা দিয়ে এই মাংসে তৈরি করে থাকেন। বিশেষ করে মেজবানী রান্নার গোপন কিছু কৌশল রয়েছে এই জেলার বাবুর্চিদের হাতে। তবে রেস্টুরেন্টে গুলোতে গ্রামের বাবুর্চির রান্না করা মেজবানের স্বাদ অনেকটাই ব্যবধান রয়েছে। সেখানে মেজবানের সেই স্বাদ পাওয়া যাইনা।
তবে চট্টগ্রামের এই ঐতিহ্যবাহী মেজবান সবচেয়ে বেশি খাবার হয়, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারি, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ এলাকার উপজেলা গুলোতে। আর অতিথি আপ্যায়নেও চট্টগ্রামের মানুষ সেরা। তারা মানুষকে খাওয়াতে পছন্দ করেন।