সত্য ঘটনা অবলম্বনে: জীবনের জয়
মোহাম্মদ ফজলুর রহমান:: উল্টো গান বুঝেন! ধরেন একটা গান উল্টো করে গাইলে কেমন হয়! অর্থ বদলে দেয়ার মতো করে? এই যেমন আবদুল জব্বারের কন্ঠের একটি গান। যে গানের সূচনা লাইনে আছে “তুমি কি দেখেছ কভু, জীবনের পরাজয়? দুঃখের দহনে, করুন রোদনে, তিলে তিলে তার ক্ষয়।”
এখানে জয় এর আগে পরা বাদ দিবো, ক্ষয় মুছে ফেলবো। দূ:খের বদলে বসবে সুখ, করুণতাকে কেড়ে নিবে অরুণ আনন্দ। আপনার মনে এতক্ষণে প্রশ্ন এসে পড়া স্বাভাবিক। কারণ, কেনইবা এতো জীবনান্দদের ছাপ্ এইসব কথায়।
হ্যা, ঠিকই ধরেছেন। ভুল জায়গায় মন পড়েনি একদমও আপনার। এবার তাহলে একটু ঘুরেফিরে দেখি ‘কি থেকে কি হলো যে, কি জানি কি হবে পরে।’
একটা ফার্মেসি ও তার সাথে কয়েকটি চরিত্রের কথা বললেই বুঝা যাবে ব্যাপারটা। একজন দু:খী এলেন। ঔষধ দরকার। কিন্তু হাতে টাকাকড়ি নেই। কি করবেন বুঝতে পারছেন না।
দোকানি এই কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থার সাথে বেশ পরিচিত। এই অবস্থার প্রতিষেধকও আছে তার হাতে। তাই মুখে মৃদৃ হাসি রেখে প্রেসক্রিপশনটা নিলেন। এরপর সটাসট ঔষধ খুজেঁ নিতে শুরু করলেন।
এদিকে অসহায় মুখটি আরো বেশি অসহায় ছবি সৃজনের দিকে যাচ্ছে। কারণ, টাকার বিনিময়েই তো মিলবে এই জীবন রক্ষাকারী ঔষধ! কি করে কিনবেন তিনি!
এবার রহস্য খোলাসা করলেন ঔষধ দোকানি। বললেন, “ওই যে, ওই গাড়িটি দেখুন। গাড়িটি চুয়েটের এক প্রফেসরের। উনারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই প্রফেসর।”
ঔষধ দোকানির এই কথা তো কোন সমাধান দেয় না। কিছু বুঝাও যায় না এতে। গরিবিহালের লোকটি তাই আরো কিছু শোনার অপেক্ষায়।
ঔষধ দোকানির পরের কথা, “আপনার টাকা লাগবে না। বিনামূল্যে ঔষধ পাবেন। কারণ ওই স্যারেরা ফার্মেসিতে ১০ হাজার টাকা জমা রেখেছেন। আর বলেছেন, কোন অভাবী লোক ঔষধ কিনতে না পারলে এখান থেকে টাকা নিয়ে ঔষধ দিতে। আপনাকে ওই ফান্ড থেকেই ঔষধ দিচ্ছি।”
আসলে, জীবন এভাবে জয়ী হয়।
এভাবে ধন্য হয় বেঁচে থাকা।
এভাবে আসে জীবনের জয়গান।
এভাবেই বড় হয় সমাজ-রাষ্ট্র।
মোহাম্মদ ফজলুর রহমান, উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা), চুয়েট।